স্বপ্নভূমি ডেস্ক : আলুর উৎপাদন ও স্থানীয় ভোগে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আলুর উৎপাদন বেশি বা কম হলে বাজারে যে সংকট তৈরি হয়, তা সহজে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। দেশের বিপুল খাদ্যপণ্য আমদানি ব্যয় কমাতে কৃষি উৎপাদন বাড়ানো জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর কুড়িলে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএসএ) আয়োজিত 'আলু উৎসব ২০২৫'-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি থাকায় সমস্যা তৈরি হয়েছিল, আবার এ বছর দাম কম, এতেও সমস্যা হচ্ছে। শুধু রপ্তানির ওপর নির্ভর না করে স্থানীয় ভোগ ও চাহিদা বাড়ানো প্রয়োজন।

তিনি আলুর দাম কমলেও ভোগ কেন বাড়ছে না, সে বিষয়ে কারণ ও প্রয়োজনীয় উৎপাদন মাত্রা বিশ্লেষণের ওপর গুরুত্ব দেন।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, গত মৌসুমে দেশে ১ কোটি ৪ লাখ টন আলু উৎপাদন হয়েছে। যেখানে খাওয়ার আলুর চাহিদা প্রায় ৯০ লাখ টন। অর্থাৎ, চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। বিদেশে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ রপ্তানি না হওয়ায় দাম কমেছে।

তিনি আরও বলেন, এক বছর আলুর দাম বাড়ে আবার এক বছর কমে—এই প্রবণতা স্বাস্থ্যকর নয়। উৎপাদন পর্যায়ে দাম কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হিমাগার সমিতির (বিসিএসএ) সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, আলু দেশের দ্বিতীয় প্রধান অর্থকরী ফসল ও খাদ্য। ৯০ থেকে ১১০ দিনের স্বল্পমেয়াদি আলুর ফলন অন্যান্য খাদ্যশস্যের প্রায় তিন গুণ।

তিনি জানান, আলুর এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অভ্যন্তরে খাদ্য হিসেবে আলুর বহুমুখী ব্যবহার নিশ্চিত করা, প্রক্রিয়াজাতকৃত আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গুণগত মানসম্পন্ন আলু রপ্তানি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যেই এই আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল।

আলু উৎসব ২০২৫ মূলত বাংলাদেশে আলুর বহুমুখী ব্যবহার অনুসন্ধান, রপ্তানি বৃদ্ধি, আধুনিক সংরক্ষণ প্রযুক্তি প্রবর্তন এবং আলু প্রক্রিয়াজাত শিল্প সম্প্রসারণকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান ও চীনের ভুই গ্রুপের চেয়ারম্যান সাউ বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

সারা দেশ থেকে প্রায় ৫০০ জন কৃষক মেলায় উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ১০ জনকে আদর্শ কৃষক হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়। উৎসবে দেশি-বিদেশি ৬৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় এবং স্টলগুলোতে আধুনিক চাষাবাদ, কোল্ড স্টোরেজ প্রযুক্তি, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মূল্য সংযোজিত খাদ্যপণ্যের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।