স্বৈরাচার পতন দিবস আজ: গণ-অভ্যুত্থানের মুখে এরশাদের ৯ বছরের শাসনের অবসান
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১৬
স্বপ্নভূমি ডেস্ক : আজ ৬ ডিসেম্বর, স্বৈরাচার পতন দিবস। ১৯৯০ সালের এই দিনে সর্বাত্মক গণ-আন্দোলনের মুখে তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ (এইচ এম) এরশাদ ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ নয় বছরের সামরিক শাসনের অবসান ঘটে, এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র তার মুক্তি ফিরে পায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতি বছর দিবসটি পালন করে থাকে।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ তৎকালীন সেনাপ্রধান এইচ এম এরশাদ সামরিক আইন জারির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করলে শুরু হয় দীর্ঘ স্বৈরশাসন। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বামপন্থী দলগুলোর নেতৃত্বাধীন জোটগুলো একটানা এই শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যায়।
এই আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় আসে ১৯৯০ সালের নভেম্বরে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট, বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট ও ওয়ার্কার্স পার্টি-জাসদ নেতৃত্বাধীন জোট ২১ নভেম্বর যৌথভাবে একটি রূপরেখা ঘোষণা করে। জামায়াতে ইসলামীও এই এরশাদবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়। টানা আন্দোলন ও তিন জোটের এই সুনির্দিষ্ট রূপরেখার কাছে হার মেনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
দীর্ঘ ও রক্তস্নাত এই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন নূর হোসেন, ডা. মিলন সেলিম, দেলোয়ার, তাজুলসহ অগণিত ছাত্র-জনতা। তাদের আত্মত্যাগের ফলেই আজকের এই দিনে গণতন্ত্র তার অধিকার ফিরে পেয়েছিল।
১৯৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এরশাদের সামরিক সচিবের দায়িত্বে থাকা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মনজুর রশীদ খান তার 'এরশাদের পতন ও সাহাবুদ্দীনের অস্থায়ী শাসন কাছ থেকে দেখা' বইয়ে ১৯৯০ সালের পটপরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন।
তিনি লেখেন, ১৯৯০ সালের শুরুর দিকেও এরশাদ সরকার যথেষ্ট সুরক্ষিত এবং দেশের রাজনীতিতে তার ভালো নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বলে মনে হচ্ছিল। বিশেষত ১৯৮৭ সালের নভেম্বরের পর রাজনৈতিক দলগুলো এরশাদকে কোণঠাসা করার মতো বড় কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। এরশাদ নিজেও ১৯৮৭ সালের নভেম্বরের বিরোধী আন্দোলন দমনের কৌশল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন। তবে এই স্থবিরতা ভেঙে যায় যখন ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর থেকে সম্মিলিত বিরোধী জোট নতুন করে এরশাদবিরোধী আন্দোলন শুরু করে, যা শেষ পর্যন্ত তার পতন ডেকে আনে।
আপনার মতামত লিখুন :