• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

‘পিআর আন্দোলন রাজনৈতিক প্রতারণা’: এনসিপি আহ্বায়কের বিস্ফোরক বক্তব্যে জামায়াতের তীব্র প্রতিক্রিয়া


FavIcon
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 21, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনকে ‘পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা’ বলে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বিস্ফোরক বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের নাহিদ ইসলামের বক্তব্যকে ‘অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

রোববার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, "দায়িত্বশীল জায়গা থেকে নাহিদ ইসলামের পিআর নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন ইস্যুতে এ ধরনের বক্তব্য অপ্রত্যাশিত ও অগ্রহণযোগ্য। যা কোনোভাবে সমর্থন করে না জামায়াতে ইসলামী।"

নাহিদ ইসলামের অভিযোগ: আন্দোলন ছিল হাইজ্যাকের চেষ্টা
এর আগে বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ ইসলাম জামায়াতের পিআর আন্দোলন নিয়ে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তিনি লেখেন, "জামায়াতে ইসলামীর তথাকথিত আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) আন্দোলন একটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া কিছুই ছিল না।"

তিনি দাবি করেন, জনগণের গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র ও সংবিধানের পুনর্গঠনের প্রকৃত প্রশ্ন থেকে জাতীয় সংলাপ ও ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়াকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্যই জামায়াত এই আন্দোলন করেছিল।

নাহিদ ইসলাম পোস্টে আরও লেখেন, "ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার দাবিটি ছিল সাংবিধানিক সুরক্ষা হিসেবে। আমরা এ ধরনের মৌলিক সংস্কার ঘিরে একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম এবং জুলাই সনদের আইনি কাঠামোকে বিস্তৃত জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু জামায়াত ও তার মিত্ররা এই এজেন্ডা হাইজ্যাক করে এটিকে শুধু পিআর ইস্যুতে পরিণত করে।"

তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াত এই পিআর আন্দোলনকে "দলীয় হীন স্বার্থ আদায়ে দরকষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের উদ্দেশ্য কখনোই সংস্কার ছিল না, এটি ছিল কৌশল মাত্র।"

‘কৌশলগত অনুপ্রবেশ ও রাজনৈতিক নাশকতা’
এনসিপি আহ্বায়কের দাবি, জামায়াতে ইসলামী জুলাই অভ্যুত্থানের আগে বা পরে কখনো সংস্কার আলোচনায় অংশ নেয়নি এবং তারা কোনো বাস্তব প্রস্তাব, সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি কিংবা গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতি কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

তিনি জামায়াতের আচরণের সমালোচনা করে লেখেন, "ঐকমত্য কমিশনের সংস্কারের প্রতি তাদের হঠাৎ সমর্থন কোনো দৃঢ় বিশ্বাসের কিছু ছিল না, বরং এটি ছিল কৌশলগত অনুপ্রবেশ, সংস্কারবাদের ছদ্মবেশে একটি রাজনৈতিক নাশকতা।"

নাহিদ ইসলাম পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের জনগণ জামায়াতের এই প্রতারণা স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছে এবং তারা আর কোনো মিথ্যা সংস্কারবাদী বা কৌশলী ব্যক্তিদের দ্বারা প্রতারিত হবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, সর্বশক্তিমান (আল্লাহ) কিংবা এই দেশের সার্বভৌম জনগণ কেউই আর কখনো "অসৎ, সুবিধাবাদী এবং নৈতিকভাবে দেউলিয়া শক্তিকে" তাদের শাসন করতে দেবে না।

পিআর পদ্ধতি নিয়ে জামায়াতের সঙ্গে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের বিতর্কের মধ্যেই এনসিপি আহ্বায়কের এমন বিস্ফোরক বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।