• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

ইউপি সদস্য ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে হত্যার অভিযোগ, আড়াই মাসপর কবর থেকে তোলা হলো লাশ


FavIcon
Swapnobhumi
নিউজ প্রকাশের তারিখ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২৮
ছবির ক্যাপশন: ad728

মনিরামপুর প্রতিনিধি :
যশোরের মনিরামপুরে আব্দুল মজিদ দফাদার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তাঁর ইউপি ছেলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় নিহতের জামাতা মামলা করার পর আদালতের নির্দেশে ময়না তদন্তের জন্য আজ (রোববার) দুপুরে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। 
এদিকে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলে সোহরাব হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি জেল হাজতে বন্দী আছেন। 
সোহরাব হোসেন নেহালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। পারিবারিক কলহের জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি বাবা আব্দুল মজিদ দফাদারকে মারপিট করে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নেহালপুরে নিজ বাড়িতে মৃত্যু হয় আব্দুল মজিদ দফাদারের। পরের দিন ময়নাতদন্ত ছাড়া তার লাশ দাফন করা হয়। এরপর ২৯ অক্টোবর শ্বশুরকে হত্যার অভিযোগ তুলে শ্যালক সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন খাকুন্দি এলাকার আব্দুস সাত্তার মোল্যা। আদালতের নির্দেশে ৪ নভেম্বর মনিরামপুর থানার ওসি হত্যা মামলা গ্রহণ করেন। এরপর অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ছেলেকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে সোহরাব হোসেনকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এখনো জেল হাজতে বন্দী আছেন অভিযুক্ত সোহরাব। 
মামলার বাদী আব্দুস সাত্তার বলেন, আমার শ্বশুর আব্দুল মজিদের এক ছেলে আর এক মেয়ে। নওয়াপাড়ায় পাটকলে কাজ করে ছেলে সোহরাবের সাথে থাকতেন তিনি। ১০ মাস আগে স্ত্রী দুই সন্তানের জননী শিল্পিকে তালাক দেন সোহরাব। যা নিয়ে বাবার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় ছেলের। এছাড়া নিজের নামে সম্পত্তি লিখে দিতে বাবাকে চাপ দিচ্ছিলেন সোহরাব। কিন্তু বাবা তাতে রাজি হননি।
বাদী বলেন, একপর্যায়ে আমার শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন তিনি ছেলে সোহরাবের কাছে কিছু টাকা চান। ছেলে টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আশপাশের কয়েক জনের কাছে টাকা চান আমার শ্বশুর। বিষয়টি টের পেয়ে সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে মারধর করে ঘরে খাটের সাথে বেধে রাখে। এক পর্যায়ে আমার শ্বশুর মারা যান। পরের দিন সকালে সোহরাব বাবার মৃত্যুকে 'হার্ট অ্যাটাক' বলে চালিয়ে দেন। 
বাদী আব্দুস সাত্তার মোল্লা বলেন, আমার শ্বশুরের দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমি পুলিশকে সব খুলে বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার শ্বশুরের এক ভাই আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাকে চুপ করিয়ে রাখেন। পরে কেউ এগিয়ে না আসায় আমি আদালতে মামলা করি।
নেহালপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল হক বলেন, আব্দুল মজিদ দফাদারের মৃত্যুর বিষয়ে তখন আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেননি। পরে তার জামাতা আদালতে মামলা করেছেন। আদালতের নির্দেশে থানায় হত্যা মামলা রেকর্ড হলে আমরা অভিযুক্ত ছেলে সোহরাব হোসেনকে গ্রেফতার করি। বর্তমানে সোহরাব জেল হাজতে আছেন।
এসআই রেজাউল হক আরও বলেন, আদালত বৃদ্ধ আব্দুল মজিদের মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের আদেশ পেয়ে বৃদ্ধ আব্দুল মজিদ দফাদারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়ে।