স্বপ্নভূমি ডেস্ক : নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ঘোষণা দিয়েছে: প্রথমত, পোস্টার ব্যবহার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, এবং দ্বিতীয়ত, ১৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সাংবাদিকদের কাছে সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি, সীমানা সংক্রান্ত মামলা এবং গণভোট নিয়ে কমিশনের অবস্থান তুলে ধরেন নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

ইসি সচিব জানান, কমিশনের পক্ষ থেকে আচরণবিধি হাতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছিল। এখন সেই বিধি পাওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।

এই সংলাপে মূলত তিনটি বিষয়ে আলোচনা হবে: 

১. আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) এবং আচরণবিধির পরিবর্তনসমূহ তুলে ধরা। 

২. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করা। 

৩. দলগুলোর নিজস্ব প্রস্তাব ও মতামত শোনা।

সচিব আখতার আহমেদ বলেন, সংলাপে পর্যায়ক্রমে সব নিবন্ধিত দলকেই ডাকা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সব রাজনৈতিক দলই ইতিবাচক সাড়া দেবে। কমিশন চায়, এই মাসের মধ্যেই সংলাপসহ নির্বাচন পর্যবেক্ষক নিবন্ধনের কার্যক্রম শেষ করতে।

এছাড়াও, নতুন আচরণবিধিতে একটি মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে— নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও রাজনৈতিক দল উভয়কেই আচরণবিধি এবং প্রাসঙ্গিক আইন মেনে চলার অঙ্গীকারনামা দিতে হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা এককভাবে এই অঙ্গীকারনামা দেবেন।

ইসি সচিব সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রকাশিত নতুন আচরণবিধির মৌলিক পরিবর্তনগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি নিশ্চিত করেন, এবার থেকে পোস্টার পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কোনো প্লাস্টিকজাতীয় উপকরণ ব্যবহার করা যাবে না।

তবে, নির্দিষ্ট আকার-আকৃতির ফেস্টুন ও লিফলেট বিতরণ করার অনুমতি থাকবে।

প্রচারণার অন্যান্য বিধিনিষেধের বিষয়ে তিনি বলেন,

বাগেরহাটের আসন: আদালতের রায়ে বাগেরহাটে নির্বাচন কমিশনের তিনটি আসন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বাতিল করে চারটি আসনই পুনর্বহাল করা হয়েছে। সচিব জানান, এখনো আদালতের সার্টিফাইড কপি না পাওয়ায় আপিল করা হবে নাকি রায় মেনে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বিচারাধীন মামলা: সীমানা নিয়ে প্রায় ৩০টি মামলা বিচারাধীন আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকালও (১০ নভেম্বর) দুটি নতুন নোটিশ পাওয়া গেছে। আদালতের রায় ও কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্বাচনের তফসিলে প্রভাব পড়তে পারে বলেও জানান সচিব।

গণভোট: আখতার আহমেদ স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচন কমিশন বা সচিবালয় পর্যায়ে এখনো পর্যন্ত গণভোট নিয়ে কোনো নির্দেশনা বা আলোচনা হয়নি। কমিশনের অবস্থান অপরিবর্তিত।

সচিব আরও জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ইতোমধ্যে একটি মতবিনিময় সভা করা হয়েছে এবং এই মাসের শেষে অগ্রগতি যাচাই করার জন্য আরেকটি পর্যালোচনা সভা করা হবে। এছাড়া লাঙ্গল প্রতীকের দাবির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে।