বাম্পার ফলনেও পান চাষিরা বিপাকে
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 21, 2025 ইং
অভয়নগর প্রতিনিধি : যশোরের অভয়নগরে পানের বাম্পার ফলন হলেও দাম পড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পান চাষিরা। উৎপাদিত পান নিয়ে হতাশায় ভুগছেন তারা। ১৫০ টাকা দরের এক পণ পান (৮০পিস) এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে চাষিদের। অথচ একজন পান দোকানি একটি পান ৭ থেকে ৮ টাকা দরে বিক্রি করছেন।
চাষিদের অভিযোগ, সরকারি প্রণোদনা না থাকায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, পান চাষ বিষয়ক কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি বিধায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বৃষ্টিপাত ভালো হওয়ায় অভয়নগরে পানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০৫ হেক্টর জমিতে ঝাল ও সাচী দুই প্রজাতির পান চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। প্রায় এক লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পান চাষের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
স্থানীয় কৃষক ও পান ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর প্রতি পণ বড় পান বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকায়, মাঝারি সাইজ ১০০ টাকায় এবং ছোট পান ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। চলতি বছরে প্রতি পণ বড় পান বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়, মাঝারি ও ছোট পান ১০ থেকে ২০ টাকা। অথচ দোকানে একটি পান কিনতে গেলে দিতে হচ্ছে ৭ থেকে ৮ টাকা।
উপজেলার সিদ্ধিপাশা গ্রামের পান চাষি সাজেদুল ফারাজি বলেন, চলতি বছরে পানের বাম্পার ফলন হলেও আগের তুলনায় এখন দাম অনেক কম। সকালে বরজ থেকে পান ভেঙে হাটে নিলেও ক্রেতা সংকটে ঠিকমত বিক্রি হচ্ছে না। সঠিক দাম না পেয়ে অনেক চাষি তার পান নদীতে ফেলে দিচ্ছেন। দামের এই ধসের কারণে উৎপাদন খরচও উঠছে না। তাই পান চাষিদের জন্য সরকারি প্রণোদনা প্রয়োজন। প্রণোদনা না থাকায় পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষকরা।
বাঘুটিয়া গ্রামের পান চাষি শোভন শেখ বলেন, পান চাষে খৈল, বাঁশসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ অনেক বেড়ে গেছে। বিক্রির সময় সঠিক দাম মিলছে না। এর আগে পানের দাম এত কম কখনও হয়নি। গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) প্রতি পণ বড় পান (৮০পিস) ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। যে পান গত বছর ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছিলাম। চিন্তা করেছি পান চাষ বন্ধ করে অন্য লাভজনক চাষাবাদ শুরু করতে হবে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লাভলী খাতুন বলেন, ‘এই উপজেলায় নিরাপদ পান চাষ বিষয়ক কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি বিধায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা গেলে পান চাষের আবাদ বৃদ্ধি পাবে। কৃষক পাবে নায্য মূল্য।’
আপনার মতামত লিখুন :