• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

চিকিৎসায় নোবেল পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের ৩ বিজ্ঞানী


FavIcon
S Hasan
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 7, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স' গবেষণার স্বীকৃতি; অটোইমিউন রোগ ও ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনবদ্য অবদান রাখায় চলতি বছর যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার পেলেন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের তিন কৃতী বিজ্ঞানী। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম কীভাবে নিজস্ব টিস্যুকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকে—এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া 'পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স' (Peripheral Immune Tolerance) নিয়ে গবেষণার জন্য তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে।

সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় সুইডেনের স্টকহোমে অবস্থিত ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট ২০২৫ সালের চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

নোবেলজয়ী তিন গবেষক
এ বছরের চিকিৎসাশাস্ত্রের নোবেল বিজয়ীরা হলেন:

মেরি ই. ব্রাঙ্কো (Marie E. Blanco): যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক
ফ্রেড রামসডেল (Fred Ramsdell): যুক্তরাষ্ট্রের গবেষক
শিমন সাকাগুচি (Shimon Sakaguchi): জাপানের গবেষক


যে আবিষ্কারের জন্য পুরস্কার
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বাইরের জীবাণু থেকে রক্ষা করলেও, কখনও কখনও তা ভুলবশত শরীরের নিজস্ব টিস্যুকেই আক্রমণ করে বসে, যার ফল হলো অটোইমিউন রোগ। বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে 'সেন্ট্রাল টলারেন্স' (কেন্দ্রীয় সহনশীলতা) নিয়ে গবেষণা করলেও, থাইমাসের বাইরেও যে একটি নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া কাজ করে, তা প্রতিষ্ঠা করেন এই তিন বিজ্ঞানী।

নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ওলে কাম্পে বলেন, রক্তে থেকে যাওয়া সেলফ-রিঅ্যাক্টিভ টি-কোষগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে শরীরের বাইরে যে প্রক্রিয়াটি কাজ করে, সেটিই হলো পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্স। নোবেলজয়ী তিন বিজ্ঞানী এই প্রক্রিয়ার মূল রহস্য উন্মোচন করেছেন।

রেগুলেটরি টি-সেল ও FOXP3 জিনের ভূমিকা
গবেষণায় তারা দেখিয়েছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে বিশেষ এক ধরনের কোষ, যাকে রেগুলেটরি টি-সেল (Treg) বলা হয়। এই কোষগুলোর বিকাশ ও কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) নামের একটি জিনের ওপর।

শিমন সাকাগুচি ১৯৯০-এর দশকে প্রথম প্রমাণ করেন, মানবদেহে রেগুলেটরি টি-সেল আছে, যা নিজস্ব টিস্যুর বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় আক্রমণ রোধ করে।

পরে মেরি ই. ব্রাঙ্কো ও ফ্রেড র‍্যামসডেল ইঁদুর ও মানুষের শরীরে ফক্সপিথ্রি (FOXP3) জিনের ত্রুটি শনাক্ত করেন, যা এই টি-সেলের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়।

তারা দেখান, এই FOXP3 জিনই কোষগুলোর বিকাশের মূল নিয়ন্ত্রক এবং এটি পেরিফেরাল ইমিউন টলারেন্সের ভিত্তি তৈরি করে।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব
এই আবিষ্কারের ফলে বিজ্ঞানীরা এখন ভালোভাবে বুঝতে পারছেন, কীভাবে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখে, কেন এই প্রক্রিয়া ভেঙে গেলে মারাত্মক অটোইমিউন রোগ দেখা দেয়, এবং কীভাবে ক্যানসার কোষ এই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে ইমিউন সিস্টেমের আক্রমণ থেকে বেঁচে যায়। এই গবেষণা অটোইমিউন ও ক্যানসার চিকিৎসায় নতুন ধরনের কৌশল উদ্ভাবনে সহায়তা করবে।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট থেকে একটি মেডেল, সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা পাবেন।

আগামীকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় পদার্থবিজ্ঞানের নোবেলবিজয়ীদের নাম ঘোষণা করবে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স।