• ঢাকা
  • | বঙ্গাব্দ
Techogram

যশোরের মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের প্রতিটি ভাঙ্গা যেন এক একটি মৃত্যুকূপ


FavIcon
শাহরিয়ার সীমান্ত
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 18, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন: ad728

মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরের ব্যস্ততম সড়কগুলোর অন্যতম মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়ক। শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার সাথে বেনাপোল স্থল বন্দরে যোগাযোগের সংক্ষিপ্ত পথ এটি। নওয়াপাড়া থেকে মনিরামপুর হয়ে বেনাপোলসহ পশ্চিমাঞ্চলে স্বল্প সময়ে পণ্য সরবরাহে এই পথ ব্যবহার করে আসছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে একদিকে যেমন তাদের খরচ বাঁচত অন্যদিকে স্বল্প সময়ে পণ্য হাতে পেতেন ব্যবসায়ীরা।

এই সড়কের হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট ব্রিজ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার বিভিন্ন অংশে অন্তত ১৫টি ভাঙ্গন রয়েছে। এসব স্থানে রাস্তা ভেঙ্গে কয়েক ফুট দেবে যাওয়ায় সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গেল চার বছর ধরে সড়কের বেহাল দশা থাকলেও তা সংস্কারে নেওয়া হয়নি কোন উদ্যোগ। ফলে সড়কের এই অংশের ভাঙ্গাগুলো এখন মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক।

সরেজমিন দেখা গেছে মনিরামপুর-নওয়াপাড়া সংযোগ পাকা সড়কের হোগলাডাঙ্গা ঋষিপাড়া থেকে শুরু করে হাজিরহাট ব্রিজের সামনের কিছু অংশ পর্যন্ত তিন কিরোমিটার রাস্তায় ১৫টি অংশে ভেঙ্গে কয়েকফুট দেবে গেছে। যারমধ্যে হোগলাডাঙ্গা ও হাজিরহাট বাজারের আগের ভাঙ্গনগুলো ভয়ংকর। এছাড়া সড়কের অভয়নগর উপজেলার অংশেও কয়েকটি ভাঙ্গন দেখা গেছে। 


স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তা যখন ভাল ছিল তখন রাত দিন পণ্য বোঝাই ছোটবড় ট্রাকের শব্দ কানে আসত। রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইক আর টেকার ( যাত্রীবাহী ৪ চাকার ছোট যান) বেশি চোখে পড়ে। রাস্তার ভাঙ্গন এত ভয়ংকর যে চার চাকার গাড়ি পার হতে দেখলে মনে হয় যে কোন সময় একদিন হেলে উল্টে পড়বে। 

২০২১ সালের শেষের দিকে আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারে কাজ করেন শাহারুল ইসলাম নামে যশোরের এক ঠিকাদার। ওই সময় ঠিকাদারের লোকজন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তা সংস্কার করলেও ঠিকাদার আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তখন ভয়ে তারা কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননি। ফলে রাস্তার কাজ শেষে চলাচল শুরু হতেই রাস্তা ফেটে দেবে গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মনিরামপুর-নওয়াপাড়া পাকা রাস্তাটির হোগলাডাঙ্গা থেকে শুরু করে সামনের অংশ ভবদহের জলাবদ্ধতার অংশ। এই সড়কের দুই পাশে ছোট বড় অনেক জলাশয় রয়েছে। ২০২১ সালে রাস্তা সংস্কারের সময় জলাশয়গুলোর পাশের অংশে প্যালাসাইডিং না করে ওই জলাশয় খুঁড়ে রাস্তার পাড় বাধাঁ হয়েছিল। ফলে রাস্তা চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার ৮-১০ দিনের মধ্যে দেবে গিয়ে কার্পেটিংয়ে ফাটল ধরে। এরপর মাস না পার হতে রাস্তা কার্পেটিংসহ নিচে দেবে গিয়ে গর্ত হয়ে যায়। তখন উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর রাস্তার ভাঙ্গা  অংশ পুনরায় সংস্কার না করে ইটের সলিং বসিয়ে দেয়। যা আস্তে আস্তে ভেঙ্গে দেবে গিয়ে মৃত্যকূপে পরিণত হয়েছে। সেই থেকে ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা।


পথচারী রাসেল পারভেজ বলেন, প্রায়-ই এই সড়কে নওয়াপাড়া আসা যাওয়া করি। মোটরসাইকেলে চড়লে তেমন সমস্যা মনে হয়না। কিন্তু ইজিবাইক বা টেকারে উঠলে ভাঙ্গা অংশ পারাপারের সময় মনে হয় গাড়ি উল্টে পড়বে। তখন আতঙ্কে থাকতে হয়। 

রাসেল পারভেজ বলেন, রাস্তা ভাঙ্গাচুরা হওয়ায় মনিরামপুর থেকে নওয়াপাড়া পৌঁছাতে আধা ঘন্টার পথ এখন এক ঘন্টারও বেশি সময় লাগে।

মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী খালেকুজ্জামান বলেন, মনিরামপুর-নোয়াপাড়া সড়কের হোগলাডাঙ্গা থেকে হাজিরহাট ব্রিজের সামনের কিছু অংশ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের দিকে সংস্কার কাজ শুরু হবে।