যশোরে পি.আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
সাইফুল্লাহ খালিদ
নিউজ প্রকাশের তারিখ : Oct 15, 2025 ইং
স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখানুপাতিক (পি.আর) পদ্ধতিতে প্রবর্তন,প্রয়োজনীয় সংস্কার,জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি,গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার,আসন্ন নির্বাচনের জন্য লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণের দাবিতে আজ ১৫ অক্টোবর ২০২৫ বুধবার সকাল ১০ টায় যশোর প্রেসক্লাব চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ,যশোর জেলা শাখার সভাপতি মিয়া মুহাম্মদ আব্দুল হালিম এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী সরদার এর পরিচালনায় এক বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয় ।
মিছিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর শিল্প বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও যশোর সদর ৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা মুহা. শোয়াইব হোসেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা মোঃ শোয়াইব হোসেন বলেন- পি. আর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচনে পেশী শক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ব থাকে না, অবৈধভাবে ভোট কেন্দ্র দখল, ভোট ডাকাতীর মহৌৎসব, সহিংষতা, নৈরাজ্য, জিঘাংসা, অস্থিরতা, হানাহানি, অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা থাকেনা। পি.আর পদ্ধতির নির্বাচনের ফলে নিবন্ধিত প্রায় প্রত্যেকটি দলের ভোটের আনুপাতিক হারে প্রতিনিধি জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবেন, কোন দল বা সংস্থা, গোষ্ঠী, যে কোন পেশাজীবী সংগঠন তথা আপামর জনগনের নতুন কোন দাবী আদায়ের ক্ষেত্রে পার্লামেন্টেই আলোচনা-পর্যালোচনার মাধ্যমে যাবতীয় মৌলিক সমস্যার সমাধান হবে, এতে করে পার্লামেন্টেই হবে সামাজিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ন বিষয়ের আলোচনার কেন্দ্র বিন্দু। যার ফলে দেশব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতা, বিভক্তি, বিভাজন, মারামারী, হানাহানি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, অরাজকতা, হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও জালাও-পোড়াও, অগ্নি সংযোগ, হামলা-মামলা, লুটতরাজ, প্রতিহিংসার দানবীয় অপরাজনীতির অবসান হয়ে কাঙ্খিত শান্তি পূর্ণ প্রতিযোগিতার রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। দেশের জনগন স্বাচ্ছন্দময় জীবন যাপন করবে। দেশময় স্থিতিশীলতার কারনে বন্ধু প্রতীম আন্তর্জাতিক বিদেশী বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের নির্বিঘ্নে নির্ভাবনায় বিনিয়োগ আসবে, নতুন নতুন কর্ম সংস্থানের সৃষ্টি হবে, ফলে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে জাতি মুক্তি পাবে ইনশাআল্লাহ। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অচিরেই বাংলাদেশ হবে আত্মনির্ভরশীল, সুখী সমৃদ্ধ শান্তিময় আদর্শ কল্যাণ রাষ্ট্র। বিশ্বের প্রায় ৯১টির বেশী দেশে কোনও না কোন প্রকারের পি. আর. পদ্ধতি অনুসরণ করে সুফল পাচ্ছে। এর মধ্যে শতভাগ পি.আর পদ্ধতি ব্যবহার করে নির্বাচন আয়োজন হয়ে থাকে- বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন ইত্যাদি দেশ সমূহে।জেলা সভাপতি মিয়া মোঃ আব্দুল হালিম বলেন,
"ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পি. আর. পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবী করে আসছে। দেশকে স্থায়ীভাবে স্বৈরতন্ত্রের ভার থেকে রক্ষা করা, সব নাগরিকের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের লক্ষ্য"। বিগত ৫৪ বছরে যে পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়েছে, সেই পদ্ধতি দেশকে ক্রমান্বয়ে পেছনের দিকে নিয়ে গেছে। অতীতের অভিজ্ঞতায় পুরোনো বন্দোবস্তে নির্বাচন করার কোনো অর্থ হয় না।
এ দাবী দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। পি. আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে স্বৈরশাসনের অবসান ঘটবে।অথচ একটি দল পি. আর পদ্ধতির নির্বাচনের বিরোধীতা করে আসছে।এ সময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অন্যান্য নেতাকর্মীরা আগামী সংসদ নির্বাচন পি.আর পদ্ধতিতে করার জোর দাবি জানায়। অন্যথায় আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করে নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার দেন তারা।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইসলামী আইনজীবী পরিষদ খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট নুর ইসলাম (নুরুল, সহ-সভাপতি ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা রুহুল আমিন,জয়েন্ট সেক্রেটারি এইচএম মহসিন,অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হাফেজ আব্দুর রশিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. আশিক বিল্লাহ ,প্রচার দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান, দপ্তর সম্পাদক মুফতি মঈন উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক এটিএম আখতারুজ্জামান তাজু,ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ইমদাদুল্লাহ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আসাদুজ্জামান, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মুস্তাফিজুর রহমান মুন্না, সদর থানা সেক্রেটারি মাওলানা ওসমান গনি , পৌর শাখার সেক্রেটারি অলিউর রহমান, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবুল বাশার,সাধারণ সম্পাদক গাজী শহিদুল ইসলাম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের জেলা সেক্রেটারি প্রভাষক আশরাফুল ইসলাম , ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা সভাপতি মুফতি আবু জর বিন হাফিজ,ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ যশোর জেলা সভাপতি মাওলানা ইমরান হোসাইন প্রমূখ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৫-দফা দাবিসমূহ:
১. আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর গণভোট আয়োজন করা
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা
৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা
৪. ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা
৫. স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
আপনার মতামত লিখুন :