কেশবপুর প্রতিনিধি: যশোরের
কেশবপুরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে
পড়েছে। কেশবপুর পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা এখন প্লাবিত। বাড়িঘরে
পানি ঢুকে পড়ায় মধ্যকুল খানপাড়া এলাকার মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিতে শুরু
করেছে। নলকূপ তলিয়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। এ সমস্ত এলাকার
মানুষ গবাদি পশু নিয়ে পড়েছেন বিপাকে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি জমি
প্লাবিত হওয়ায় কৃষকেরা রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। শহরের ধান বিক্রির হাট ও ট্রাক
টার্মিনালের পূর্বাংশ তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও হরিহর নদের
পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন পৌরসভার মধ্যকুল খানপাড়া
এলাকায় গেলে দেখা যায়, বৃষ্টির ভেতরেই জলাবদ্ধ পানির ভেতর দিয়ে প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে ওই এলাকার মানুষ। ওই এলাকার বাসিন্দা
জাহানারা খাতুন বলেন, বসতঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় মালামাল নিয়ে নিরাপদ স্থানে
যেতে হচ্ছে। তাদের এলাকাটি গতবছরও হরিহর নদের পানি ঢুকে ছয় মাস জলাবদ্ধ
ছিল। সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল গ্রামের রুপালী খাতুন বলেন, গত কয়েকদিনের
বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে বাড়ির উঠানে এখন হাটুপানি হয়েছে। নলকূপ তলিয়ে
যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই গ্রামের আর্জিনা বেগম বলেন,
পানির ভেতর দিয়েই সাংসারিক কাজকর্ম করতে হচ্ছে। গরু-ছাগল নিয়ে রয়েছি
দুশ্চিন্তায়।
উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অফিস
সহকারী নিয়াজ মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে এ পর্যন্ত উপজেলার
বিভিন্ন এলাকার সাড়ে তিন হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে
পড়েছে। বেশ কয়েকটি কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে।
কেশবপুর পৌরসভার নির্বাহী
কর্মকর্তা আবুল ফজল মো. এনামুল হক বলেন, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডেই কমবেশি
জলাবদ্ধতা হয়ে পড়েছে। এ পর্যন্ত দুই হাজার ৫০০ জলাবদ্ধ পরিবারের তালিকা করা
হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জলাবদ্ধ পরিবারের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
কেশবপুর
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আলা বলেন, তার ইউনিয়নের মধ্যকুল,
আলতাপোল, মূলগ্রাম, মাগুরাডাঙা, সুজাপুর ও ব্যাসডাঙা গ্রামে প্রায় দুইশত
পরিবার জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এলাকায় টানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর পানি ঢুকে এ
অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা
খাতুন বলেন, নদ-নদীতে পানিপ্রবাহের জন্য কচুরিপানা অপসারণ অব্যাহত রয়েছে।
আপার ভদ্রা নদীতে একটি স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খনন কাজ চলছে। আরেকটি স্কেভেটর
দিয়ে বুড়িভদ্রা ও হরিহর নদেও খনন করা হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন
বোর্ডের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।