আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে দুই বছর ধরে সংঘাতরত ইসরায়েল এবং গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস তার প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। তিনি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন।

গতকাল বুধবার (তারিখটি আপনার লেখার সময় উল্লেখ করা ভালো) ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, "আমি খুবই গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইসরায়েল এবং হামাস উভয়েই আমাদের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করেছে। খুব শিগগিরই সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং সমঝোতার ভিত্তিতে ইসরায়েলও গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।"

মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারও এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, "আমরা (এ যুদ্ধের) মধ্যস্থতাকারীরা এই মর্মে ঘোষণা করছি যে আজ রাতে গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের সমস্ত শর্ত ও বিধান বাস্তবায়নে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।" তিনি আরও জানান, এই চুক্তির জেরে গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটবে, সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মি ও ফিলিস্তিনি কারাবন্দিরা মুক্তি পাবে এবং গাজায় ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশে আর কোনো বাধা থাকবে না। চুক্তির বিস্তারিত বিষয়গুলো পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি ২০ দফা পরিকল্পনার ব্যাপারে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার পাশে ছিলেন।

সেদিন ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং স্থায়ী শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত এই নতুন পরিকল্পনার কপি ইসরায়েল, হামাস এবং অপর দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। শুরুতে হামাস ব্যতীত বাকি সবাই তাঁর পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছিল। পরে ৩ অক্টোবর শুক্রবার হামাসও এই প্রস্তাবে সম্মতি জানায়।

এরপর ৪ অক্টোবর ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করার আহ্বান জানান। অবশেষে ৬ অক্টোবর মিসরের লোহিত সাগর তীরবর্তী পর্যটন শহর শারম আল শেখ-এ ট্রাম্পের প্রস্তাবের ওপর বৈঠক শুরু হয় ইসরায়েল, হামাস, মিসর, যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের প্রতিনিধিদের মধ্যে। দীর্ঘ দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা চলার পর এই চুক্তির প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করল ইসরায়েল-হামাস।

এই চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টা আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, আলোচনা খুবই ভালো দিকে এগোচ্ছে এবং তিনি "এ সপ্তাহের শেষের দিকে, সম্ভবত রোববার, মধ্যপ্রাচ্যে যেতে পারেন।"