স্বপ্নভূমি ডেস্ক: তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ; মোট ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শেষ সাক্ষীকে আজ, সোমবার (৬ অক্টোবর) জেরা করা হবে। এটি মামলার বিচারিক কার্যক্রমের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলে এই জেরা অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাক্ষ্য দেওয়া মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরা করবেন।

তদন্ত কর্মকর্তার জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য

এ মামলার ৫৪তম বা সর্বশেষ সাক্ষী হিসেবে গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন। তার জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন নৃশংসতার ভয়ংকর চিত্র উঠে এসেছে।

তাঁর দেওয়া তথ্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ:

গত জুলাই আন্দোলন চলাকালে ৪১টি জেলার ৪৩৮টি স্থানে হত্যাকাণ্ড এবং ৫০টিরও বেশি জেলায় মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার ওপর তিন লাখ পাঁচ হাজার গুলি ছোড়া হয়েছিল।

জবানবন্দির সময় তিনি যমুনা টেলিভিশন, বিবিসি, আল-জাজিরা, আমার দেশ সহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত নৃশংসতার প্রামাণ্য চিত্র ও ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করেন।

শেষ সাক্ষীর জেরার পর যুক্তিতর্ক

২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর টানা তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন আলমগীর। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ জেরার জন্য দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় সর্বমোট ২৫ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষী তাদের জবানবন্দি দিয়েছেন।

তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হলেই মামলাটি যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপনের দিকে এগোবে, যার মাধ্যমে মামলার রায়ের দিকে অগ্রসরের পথ উন্মুক্ত হবে।

আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ও আসামিরা

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় শেখ হাসিনা, কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের (যিনি রাজসাক্ষী হয়েছেন) বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। প্রসিকিউশন তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে।

উল্লেখ্য, মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার, যেখানে ৮১ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব হত্যাযজ্ঞের জন্য দায়ী শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।