স্বপ্নভূমি ডেস্ক : ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা থানার মিঞা জিন্নাহ আলম ডিগ্রী কলেজ প্রাঙ্গণে সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা আয়োজিত পবিত্র কুরআন বিতরণ কর্মসূচিতে ছাত্রদল বাধা প্রদান করেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সংঘটিত এই "ঘৃণিত ঘটনার" তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রীসংস্থা এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

ছাত্রীসংস্থার নিন্দা ও প্রতিবাদ

আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার প্রচার বিভাগীয় সম্পাদিকা রিনতাহা তারান্নুম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।

কেন্দ্রীয় সভানেত্রী মুনজিয়া ও সেক্রেটারি জেনারেল উম্মে আরওয়া বিবৃতিতে বলেন, "পবিত্র কুরআন বিতরণের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী আচরণ আমাদেরকে হতভম্ব করেছে। এর মাধ্যমে উক্ত ক্যাম্পাসে ছাত্রীসহ শিক্ষকদের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।"

সংস্থা জানায়, কুরআন বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার পরই ছাত্রদল কর্মীরা এসে বাধা প্রদান করে। তারা ‘জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই করো, ধর ধর শিবির ধর, ধরে ধরে জবাই কর’— এ ধরনের ঘৃণ্য এবং আক্রমণাত্মক স্লোগানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে এবং শিক্ষকদের সাথেও উগ্র আচরণ করে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, "মহাগ্রন্থ আল-কুরআন কোনো রাজনৈতিক গ্রন্থ নয়...। কুরআন বিতরণে বাধা দেয়া মানে যেমন ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ তেমনি মৌলিক অধিকার ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা।" তারা অভিযোগ করেন, ঘটনার পর কলেজ ছাত্রদল শাখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিদ্বেষপূর্ণ হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানিয়েছে ছাত্রীসংস্থা।

 

ছাত্রশিবিরের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ

অন্যদিকে, ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সীরাতুন্নবী (সা.) উপলক্ষে নারী শিক্ষার্থীদের পবিত্র কোরআন বিতরণে ছাত্রদল সন্ত্রাসীদের বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

আজ (২৬ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ উদ্বেগ জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন, ২৫ সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আওয়াল অর্ক জোয়ারদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন হাসনাতের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী কুরআন বিতরণে বাধা দেয়। এ সময় তারা উসকানিমূলক ও ফ্যাসিবাদী স্লোগান দেয় এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণ করে।

শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, "কোরআন বিতরণের মতো শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাস বা কারও অধিকার হরণের ক্ষেত্র নয়। ৫ আগস্ট-পূর্ববর্তী সময়ে আমরা এমন উগ্র আচরণ ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছি, যা এখন হুবহু অনুসরণ করছে ছাত্রদল।" ছাত্রশিবির এ ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে।